খালেদাকে গ্রেপ্তারে ফের পরোয়ানা, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ শেষ
জিয়া এতিমখানা ও দাতব্য দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে হাজির না হওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ফের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
খালেদার আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত সরকারের নির্দেশে এই নজিরবিহীন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ রকম হলে কীভাবে সুবিচার পাওয়া যাবে।”
এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন। তার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন।
আর জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে আসা তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ অগাস্ট তেজগাঁও থানায় অন্য মামলাটি হয়। তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরের বছরের ১৯ মার্চ শুরু হয় বিচার।
চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার পর খালেদা জিয়া নির্ধারিত তারিখে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে হাজির না হওয়ায় বিচারক ১২ অক্টেবর দুই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এরপর দেশে ফিরে বিএনপি চেয়ারপারসন গত ১৯ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। ১৯ অক্টোবর খালেদা আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দিতে শুরু করেন এবং গত ছয় সপ্তাহ ধরে প্রতি বৃহস্পতিবার সেই শুনানি চলছিল।
খালেদার আইনজীবীরা স্থায়ী জামিনের আবেদন করলেও তা মঞ্জুর না করে বিচারক পরবর্তী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জামিন দিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে দিয়ে খালেদা জিয়াকে হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতারা বুধবার মানবন্ধনও করেন।
বৃহস্পতিবার জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে সপ্তম দিনের মত বক্তব্য দেওয়া কথা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু তিনি নিজে না গিয়ে হরতালে নিরপত্তার কারণ দেখিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে সময়ের আবেদন পাঠান।
সানাউল্লাহ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ডাকে হরতাল হচ্ছে। সেজন্য নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আদালতের কাছে সময়ের আবেদন করে জানান, ওই কর্মসূচির মধ্যে আদালতে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু আদালত বিষয়টি আমলে না নিয়ে সরকারের নির্দেশে এই আদেশ দিয়েছে বলে আমরা মনে করি।”
এই আইনজীবী দাবি করেন, হরতাল শেষে দুপুরের পর খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু আদালত পরোয়ানা জারি করায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না।
মামলার পরবর্তী তারিখে বিএনপি চেয়ারপারসন আদালতে যাবেন বলে জানান তার আইনজীবী।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, “হরতাল চলছে বলে খালেদা জিয়া আদালতে আসেননি। আমি বলেছি, হরতাল সেভাবে হচ্ছে না। আর হরতাল তো ২টা পর্যন্ত। তিনি চাইলেই আসতে পারতেন।”
এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রথম দিন ১৯ অক্টোবর খালেদা জিয়া দাবি করেন, এতিমদের জন্য আসা একটি টাকাও তছরুপ বা অপচয় করা হয়নি, তা ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে। ২৬ অক্টোবর তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে এ মামলা ‘ভুয়া, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
২ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থন করে তৃতীয় দিনে খালেদা বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে তাকে ‘সরাতে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার নীলনকশা’ বাস্তবায়ন করছে ক্ষমতাসীনরা। আর ১১ নভেম্বর বলেন, বাংলাদেশে বিচারকরা স্বাধীনভাবে আইন মেনে বিচার করতে পারেন কি না, তার এ মামলার রায়েই তার প্রমাণ আসবে।
দেশে বিচার ব্যবস্থার বর্তমান পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার পাবেন কি না- তা নিয়ে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন ১৬ নভেম্বর। সর্বশেষ ২৩ নভেম্বর তিনি এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের দুদকে নিয়োগ ও পদোন্নতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ওইদিনই জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন শুরু হয়। প্রথম দিনের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি নিজেকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ’ দাবি করেন।
আত্মপক্ষ সমর্থন অসমাপ্ত রেখেই আদালত যুক্তিতর্কের দিন ঠিক করে খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকার কথা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে দলটি।
Reed more
জিয়া এতিমখানা ও দাতব্য দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে হাজির না হওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ফের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
খালেদার আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত সরকারের নির্দেশে এই নজিরবিহীন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ রকম হলে কীভাবে সুবিচার পাওয়া যাবে।”
এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন। তার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন।
আর জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে আসা তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ অগাস্ট তেজগাঁও থানায় অন্য মামলাটি হয়। তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরের বছরের ১৯ মার্চ শুরু হয় বিচার।
চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার পর খালেদা জিয়া নির্ধারিত তারিখে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে হাজির না হওয়ায় বিচারক ১২ অক্টেবর দুই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এরপর দেশে ফিরে বিএনপি চেয়ারপারসন গত ১৯ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। ১৯ অক্টোবর খালেদা আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দিতে শুরু করেন এবং গত ছয় সপ্তাহ ধরে প্রতি বৃহস্পতিবার সেই শুনানি চলছিল।
খালেদার আইনজীবীরা স্থায়ী জামিনের আবেদন করলেও তা মঞ্জুর না করে বিচারক পরবর্তী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জামিন দিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে দিয়ে খালেদা জিয়াকে হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতারা বুধবার মানবন্ধনও করেন।
বৃহস্পতিবার জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে সপ্তম দিনের মত বক্তব্য দেওয়া কথা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু তিনি নিজে না গিয়ে হরতালে নিরপত্তার কারণ দেখিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে সময়ের আবেদন পাঠান।
সানাউল্লাহ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ডাকে হরতাল হচ্ছে। সেজন্য নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আদালতের কাছে সময়ের আবেদন করে জানান, ওই কর্মসূচির মধ্যে আদালতে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু আদালত বিষয়টি আমলে না নিয়ে সরকারের নির্দেশে এই আদেশ দিয়েছে বলে আমরা মনে করি।”
এই আইনজীবী দাবি করেন, হরতাল শেষে দুপুরের পর খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু আদালত পরোয়ানা জারি করায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না।
মামলার পরবর্তী তারিখে বিএনপি চেয়ারপারসন আদালতে যাবেন বলে জানান তার আইনজীবী।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, “হরতাল চলছে বলে খালেদা জিয়া আদালতে আসেননি। আমি বলেছি, হরতাল সেভাবে হচ্ছে না। আর হরতাল তো ২টা পর্যন্ত। তিনি চাইলেই আসতে পারতেন।”
এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রথম দিন ১৯ অক্টোবর খালেদা জিয়া দাবি করেন, এতিমদের জন্য আসা একটি টাকাও তছরুপ বা অপচয় করা হয়নি, তা ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে। ২৬ অক্টোবর তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে এ মামলা ‘ভুয়া, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
২ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থন করে তৃতীয় দিনে খালেদা বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে তাকে ‘সরাতে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার নীলনকশা’ বাস্তবায়ন করছে ক্ষমতাসীনরা। আর ১১ নভেম্বর বলেন, বাংলাদেশে বিচারকরা স্বাধীনভাবে আইন মেনে বিচার করতে পারেন কি না, তার এ মামলার রায়েই তার প্রমাণ আসবে।
দেশে বিচার ব্যবস্থার বর্তমান পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার পাবেন কি না- তা নিয়ে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন ১৬ নভেম্বর। সর্বশেষ ২৩ নভেম্বর তিনি এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের দুদকে নিয়োগ ও পদোন্নতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ওইদিনই জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন শুরু হয়। প্রথম দিনের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি নিজেকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ’ দাবি করেন।
আত্মপক্ষ সমর্থন অসমাপ্ত রেখেই আদালত যুক্তিতর্কের দিন ঠিক করে খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকার কথা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে দলটি।
Reed more
খালেদাকে গ্রেপ্তারে ফের পরোয়ানা, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ শেষ
Reviewed by Cybercoder one
on
November 30, 2017
Rating:
No comments:
Post a Comment